এবারই প্রথম সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের স্টিকার না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিক নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নীতিমালা অনুযায়ী ভোটের সময় সাংবাদিকরা মোটরসাইকেলের জন্য কোনও পাস পাবেন না। ভোটের সময় তিন দিন মোটরসাইকেল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। ওই সময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য কেউ মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন না।
ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটের সময় মোটরসাইকেল চালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত, ক্ষেত্র বিশেষ আরও অধিককাল মোটরসাইকেল বা অনুরূপ যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগে পরে মোট চার দিন সাংবাদিকরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারছেন না।
সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের স্টিকার না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টি এবারই প্রথম। তবে, অন্য যানবাহন ব্যবহার করলে স্টিকার দেওয়া হবে।
সাংবাদিক নীতিমালায় ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রিজাইডিং অফিসার অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা, ভিডিও করা ও তথ্য সংগ্রহ করতে পারার কথা বলা আছে। তবে, একাধিক সাংবাদিক একই ভোটকেন্দ্রের একই ভোটকক্ষে একসঙ্গে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরাসির প্রচার করা যাবে না।
নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (জনসংযোগ শাখা) এসএম আসাদুজ্জামানের স্বাক্ষরে (২১ ডিসেম্বর) জারি করা ওই নীতিমালায় সাংবাদিদের জন্য এক ডজনের বেশি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যা অমান্য করলে বা ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আইন, বিধি ও কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নীতিমালায়।
নীতিমালাটি ইতোমধ্যে সংসদ নির্বাচনের সব রিটার্নিং অফিনারদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ভোটগ্রহণের দিনসহ বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকরা যাতে সহজে নির্বিঘ্নে নির্বাচনি সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেন, সেজন্য সহযোগিতা করার প্রয়োজন রয়েছে। তবে, অবশ্যই নির্বাচনের সময়, ভোটগ্রহণ ও ভোট গণনার সময় প্রযোজ্য বিধি-নিষেধ মেনে করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য ভোটকেন্দ্রের সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচন নির্বাচন কমিশন থেকে সাংবাদিকদের বিশেষ কার্ড সরবরাহ করা হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নিং অফিসাররা তাদের কার্ড দেবেন। রিটার্নিং অফিসার সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে সংশ্লিষ্ট উপজেলার সাংবাদিকদের কার্ড দেওয়ার ক্ষমতা দিতে পারবেন। এছাড়া ঢাকা থেকে যেসব সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনি সংবাদ সংগ্রহ করতে যাবেন, তাদের কার্ড নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হবে। সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত এবং অনুমোদনসূচক স্টিকারযুক্ত যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করার জন্য কোনও স্টিকার ইস্যু করা হবে না।
ভোটের দিন ঢাকা থেকে গণমাধ্যগুলোর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট করেসপন্ডেন্টদের নিয়ে মটর সাইকেলে করেই বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের খবর সংগ্রহ করে থাকে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে-
১. নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।
২. ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা ও ভিডিওধারণ করতে পারবেন। তবে, কোনোক্রমেই গোপন কক্ষের ছবি সংগ্রহ কিংবা ধারণ করতে পারবেন না।
৩.একইসঙ্গে একাধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না।
৪.ভোটকক্ষের ভেতর হতে কোনোভাবেই সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।
৫.ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে।
৬.কোনোক্রমেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করা যাবে না।
৭.সাংবাদিকরা ভোট গণনা কক্ষে ভোট গণনা দেখতে পারবেন, তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না।