ফিরে আসছে পর্দায় ছোটদের অ্যাডভেঞ্চার
শীতের ছুটি মানেই, হলদে কমলালেবু, রোদ আর বাবা-মা-র হাত ধরে বেড়ানো। কখনও চিড়িয়াখানা, কখনও জাদুঘর, কখনও ইকো পার্ক। ক্রিসমাস হলিডে মানেই তাই হৈচৈ-এর সময়, আর সেই বড়দিনের ছুটি মাতিয়ে দিয়ে এবছর ছোটদের সঙ্গী হতে আসছে ছোটদের বন্ধু, আর বড়দের ছোটবেলার সেই ছেলেটা, যার নাম হল জোজো। কী আছে এই ‘অ্যাডভেঞ্চার অফ জোজো’-তে? ঘন জঙ্গল, খুদে বিচ্ছু, রঙ বেরঙের পাখি আর জীব-জন্তু আর কতগুলো দুষ্টু চোরাশিকারী। ‘গালিভার’স ট্র্যাভেলস’ থেকে ‘চুক অ্যান্ড গেক’ কিংবা ‘দেড়শো খোকার কান্ড’ হয়ে জিম করবেট এবং তপন সিংহ মশাই-এর ‘সফেদ হাতি’— এই ধারাবাহিকতায় বহুদিন পরে নিখাদ অ্যাডভেঞ্চার গল্পের আরেকটা দারুণ প্রিয় গল্প অরূপ কুমার দত্তের ‘কাজিরাঙার জঙ্গলে’ অবলম্বনে। সেই গল্পে জোজো এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের সামনে।
গপ্পোটা খুব সহজ আর সব থেকে বড় কথা একটা মন ভালো করে দেওয়া বন্ধুত্বের গল্প। একটা পরিবারেরও গল্প। জোজোর বাবা, মা, ঠাকুমা, জ্যাঠা, জ্যাঠার দুই ছেলে, এরা তো আছেনই, এছাড়া রয়েছে আরও বড় একটা পরিবার। আমাদের প্রকৃতি। যাকে ভালোবেসে বড় হতে পারলে বেঁচে থাকাটা যে খুব মজার হয়ে উঠবে সে কথা জোজো যেন বুঝতে পারে বড়পাহাড়ি ন্যাশনাল পার্কে বেড়াতে এসে। পড়ার বইয়ের বাইরে আরও পড়তে হয়, এটা বুঝতে পারে জোজো, আরও বুঝতে পারে স্কুলের পাঁচিলের বাইরে আসল স্কুলটা থাকে।
অরুণাচলের সবুজ জঙ্গল, নীল পাহাড় আর নদীতে ঘেরা পাহাড়ি গ্রামটায় এসে জোজোর সঙ্গী হয় একটা হাতি, যার নাম ননীবালা, আর মাহুতের ছেলে শিবু। এই নীলপাহাড়ির দেশেতেই খেলার ছলে শিখে যায় জোজো যে পশুপাখি,গাছপালা এবং মানুষ সবাইকে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে হবে। আর সেই প্রকৃতির পাঠ নিয়ে জঙ্গলের পশুপাখিদের রক্ষণাবেক্ষণের অফিসার হয়ে ওঠে জোজো, শিবু আর হাতি ননীবালা। পশুপাখি সংরক্ষণ, অরণ্য সংরক্ষণের মতো অত্যন্ত জরুরি কথা বারবার বলে এই ছবি।
কিন্তু অ্যাডভেঞ্চারটা কীসের? ওই যে যিনি রাতের বেলা হালুম হালুম ডাক ছাড়েন আর বাংলো বাড়ির চার পাশে জানান দিয়ে যান, ‘হাম হ্যায়, হাম হ্যায়’, সেই আঠারো ফুটের হলদে কালো ডোরাকাটা বাঘ ‘চেঙ্গিজ’। সে কি এদের বন্ধু হবে? শিবু বলে যে গ্রামের লোকেরা সবাই জানে চেঙ্গিজ এই জঙ্গলকে বাঁচিয়ে রাখে, কিন্তু সেই চেঙ্গিজকে রাতের আঁধারে মারতে চায় কারা? ভিজে মাটিতে ও কার খোঁড়া পায়ের ছাপ? এই সব কাণ্ড দেখে তো জোজোর লোম খাড়া! আর বলব না। বাকিটা গা ছমছমে জমজমাট বড়পাহাড়ি ন্যাশনাল পার্কে, সিনেমা হলের আলো আঁধারিতে বসে দেখতে হবে।
যাই বলো তোমরা, আমরা একটু ঘাবড়ে আছি, মানে আমরা যারা গাছ কাটি, জঙ্গল ছাফা করে বাড়ি বানাই, বাঘ সিংহ পাখি মেরে ঘরে সাজিয়ে খুব একেবারে হুঁ হুঁ বাবা কেমন দিলুম ভাব করি, তারা এবার গেলাম। জোজো আসছে এই শীতের ছুটিতে। সবাই মিলে হাতির পিঠে চড়ে ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে জোজোর সঙ্গে যাওয়া যাবে অ্যাডভেঞ্চারে। বড়পাহাড়ির জঙ্গলে।