”এক যুবকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার পরেও মামলা নেয়নি রমনা থানা পুলিশ”
ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে এক যুবকের ওপর হামলা চালিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার পরেও মামলা নেয়নি রমনা থানা পুলিশ।
আহতের পরিবারের অভিযোগ, হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ মামলা না নিয়ে তাদের আদালতে গিয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দেয়।
শনিবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছে ওই পরিবার।
হামলায় আহত রাশেদ মাহবুবও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে এসেছিলেন তিনি। তার কপালে এবং মাথার পেছনে একাধিক সেলাই পড়েছে।
রাশেদের বোন নাসিমা শেলী জানান, তারা সিদ্ধেশ্বরীর ‘মোশারফ গার্ডেন’র বাসিন্দা। বহুতল ওই ভবনে তাদের পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ওই ভবনে ফ্ল্যাট কিনে বসবাসকারী সহকারী পুলিশ সুপার ধীরেন মাহাপাত্রের ছেলে প্রতীক মাহাপাত্র ও সুকুমার চন্দ্র সাহাসহ ছয়-সাতজন গত ১৪ নভেম্বর রাতে ভবনের নিচতলার গ্যারেজে তার ভাইয়ের ওপর হামলা করে।
“হত্যার জন্য চাপাতি ও রড দিয়ে হামলা চালিয়ে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম করে তারা।”
রাশেদকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমেই তারা পাশের রমনা থানায় যান বলে জানান নাসিমা।
তিনি বলেন, থানায় গেলে পুলিশ তাড়াতাড়ি রাশেদের চিকিৎসার কথা বলে। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর থানায় এলে পুলিশ কর্মকর্তারা কোর্টে গিয়ে মামলা করতে বলেন।
পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে অভিযোগ করে এই নারী বলেন, এখন ওই তাদের ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি করার জন্য তার ভাই ও বৃদ্ধ মা নুরজাহান চৌধুরীকে হুমকি দিচ্ছে তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা থানার ওসি মাইনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সে রাতে তারা থানায় এসেছিল এবং এজাহারও কিছু লিখেছিল। তারপর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়ে আর আসেনি।”
তবে তার এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন রাশেদ মাহবুব।
“আমরা একাধিকবার থানায় গিয়েছি, কিন্তু পুলিশ বলেছে কোর্টে মামলা করলে ভালো হয়।”
হাইওয়ে পুলিশে নিয়োজিত সহকারী পুলিশ সুপার ধীরেনের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাশেদ মাহবুব ওই ভবনের জমির মালিক। তারা ডেভেলপার দিয়ে ভবনটি নির্মাণ করিয়েছেন।
“আমি ডেভেলপারের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট নেই। কিন্তু প্রথম থেকে দেখে আসছি, রাশেদ মাহবুবদের সঙ্গে ডেভেলপারদের সমস্যা। এখন আমরা অর্থাৎ ফ্ল্যাটের মালিকদের সঙ্গে তারা (রাশেদ) একটার পর একটা ঝামেলা সৃষ্টি করছে।
“রাশেদ মাহবুব দীর্ঘদিন ধরে সার্ভিস চার্জ দেয়নি। তাদের এখনও পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। সার্ভিস চার্জ না দেওয়ায় দারোয়ানদের সঙ্গে সে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। ওই সময় আমার সন্তানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ঝগড়ার এক ফাঁকে রাশেদ উত্তেজিত হয়ে পাশের দেয়ালের সঙ্গে আঘাত পেয়ে জখম হয়।