বাংলা একাডেমি আল মাহমুদের মরদেহে, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন
সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি আল মাহমুদের মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। একাডেমির মহাপরিচালক হাবিল্লাহ সিরাজির নেতৃত্বে কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এর পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় প্রেসক্লাবে।
কবির বড় ছেলে শরিফ আহমেদ সকালে বলেন, ‘বেলা পৌনে ১২টার দিকে কবিকে তাঁর মগবাজারের বাসা থেকে সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বাংলা একাডেমিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আধা ঘণ্টার মতো রাখা হবে।’‘আল মাহমুদ দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেছেন। এ কারণেই পরে সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেখানেও আধা ঘণ্টার মতো রাখা হবে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য’, যোগ করেন শরিফ আহমেদ।
এরপর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর ফটকে আল মাহমুদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।আল মাহমুদ গতকাল শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার পর বার্ধক্যজনিত কারণে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
কবি আল মাহমুদ ভর্তি ছিলেন ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে। নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন কবি আল মাহমুদ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তির পর কবিকে ৯ ফেব্রুয়ারি প্রথমে সিসিইউতে নেওয়া হয়।এরপর অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। তিনি ওই হাসপাতালের নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল হাইয়ের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কবির নিউমোনিয়া বৃহস্পতিবার থেকে বেড়ে গিয়েছিল।শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে প্রেসার কমে যেতে শুরু করে। তবে ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।এরপর রাতে হঠাৎ করে হৃদপিণ্ড ঠিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন রক্তচাপ কমে যেতে থাকে। এতে মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন না পৌঁছালে মানুষ ক্লিনিক্যালি মারা যায়। কবির বেলাতেও সেটা হয়েছে।
আল মাহমুদ শুধু আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি নন,তিনি একাধারে ছিলেন ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক।কবি আল মাহমুদের প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
সাহিত্যে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, শিশু একাডেমি (অগ্রণী ব্যাংক) পুরস্কার, ফররুখ স্মৃতি পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই কবি। লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৬৬) ইত্যাদি আল মাহমুদের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।