১০৪ তম জন্মদিন বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের
বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০৪তম জন্মদিন আজ। ১৯১৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই থানার ধল-আশ্রম গ্রামে জন্ম নেন তিনি। তিনি প্রায় পাঁচ শতাধিক গান লিখেছেন এবং সুর করেছেন। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়।
কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধু ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী এ গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে আবদুল করিম দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ, প্রেম-ভালোবাসার কথার পাশাপাশি তার গান কথা বলে অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।
২০০১ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। ভাটির জল-হাওয়া, মাটির গন্ধ আর কালনী-তীরবর্তী জনজীবন, মানুষের সুখ-দুঃখ, দারিদ্র্য-বঞ্চনা, জিজ্ঞাসা, লোকাচার, স্মৃতি প্রভৃতি তার গানে এক বিশিষ্ট শিল্প-সুষমায় পরিস্ম্ফুট।
তার কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘আমি কুলহারা কলঙ্কিনী’, ‘গাড়ি চলে না চলে না’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘বন্দে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে‘, ‘বসন্ত বাতাসে’ ইত্যাদি।
শাহ আবদুল করিম ৬টি গানের বই লিখেছেন। এগুলো হলো- ‘আফতাব সঙ্গীত’, ‘গণসঙ্গীত’, ‘ধলমেলা’, ‘কালনীর ঢেউ’, ‘ভাটির চিঠি’ ও ‘কালনীর কূলে’।
দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের পাশাপাশি ভাটিয়ালি গানেও দখল ছিল তার। তিনি ১৬ শতাধিক গান লিখেছেন ও সুর করেছেন।
বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। লালন শাহ, পাঞ্জু শাহ, দুদ্দু শাহ, দুরবীন শাহর দর্শনে অনুপ্রাণিত ছিলেন আবদুল করিম। সঙ্গীতে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক। পেয়েছেন সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, সিলেট সিটি করপোরেশন নাগরিক সংবর্ধনা, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, অভিমত, শিল্পকলা একাডেমি, খান বাহাদুর এহিয়া সম্মাননাসহ বহু পদক, সম্মাননা ও সংবর্ধনা।
২০০৯ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর সিলেটের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই গুণী শিল্পী।