জানালেন নায়িকা পপি অজানা তথ্য আড়াল থেকে
* ঢাকাই সিনেমার গ্ল্যামার কন্যা খ্যাত নায়িকা সাদিকা পারভিন পপির খোঁজ নেই অনেকদিন। বিয়ে, বাচ্চা হাওয়ার বিষয়ে তাকে নিয়ে গুঞ্জনেরও কমতি নেই। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ১৭তম নির্বাচনকে সামনে রেখে হঠাৎ করেই বুধবার (২৬ জানুয়ারি) আড়াল ভাঙেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী।
*এসময় এক ভিডিও বার্তায় শিল্পী সমিতির বর্তমান নেতৃত্ব মিশা সওদাগর-জায়েদ খানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। শিল্পী সমিতি থেকে নিজের সদস্যপদ বাতিলের চিঠি নিয়েও কথা বলেন। তুলে ধরেন নিজের আড়ালে থাকার কারণ। নিজের জীবন হারানোর বিষয়টি সামনে এনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পপি। সমর্থন দেন কাঞ্চন-নিপুন প্যানেলকে।
*সবাইকে অনেক শুভেচ্ছা ও সালাম জানিয়ে ভিডিওটিতে নায়িকা পপি বলেন, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই ইলিয়াস কাঞ্চন, বোন নিপুন, আমার বন্ধু রিয়াজসহ সবার জন্য শুভ কামনা রইল। ভেবেছিলাম আর কখনো ক্যামেরার সামনে আসব না। তবে না এসেও পারলাম না। দীর্ঘ ২৬ বছর আমি ফিল্ম জগতে সুনামের সাথে কাজ করে এসেছি। দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছি। তিন তিন বার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি।
*সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে পপি বলেন, ভেবেছিলাম আর কখনও ক্যামেরার সামনে আসব না। কিন্তু একজন শিল্পী হিসেবে নিজের কিছু দায়বদ্ধতা থেকে আজকে কিছু কথা না বললেই না। দীর্ঘ ২৬ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক সুনামের সংগে কাজ করার চেষ্টা করেছি… দেশে-বিদেশ থেকে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য অনেক কাজ করেছি। তিন-তিন বার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আজকে অনেক কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলা।
*পপি বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন আমি কোথায়? উল্লেখ করেন পপি বলেন, আমি আপনাদের মাঝেই আছি। ভাগ্যে থাকলে কাজেও ফিরব। বর্তমান সমিতির একটি মাত্র ব্যক্তি যার নানা অপকর্ম, কুকর্ম আর নোংরামিতে সহায়তা না করায় আমাকে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে। আমার মতো জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীর সদস্য পদ বাতিলের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটা একজন শিল্পীর জন্য কতোটা অপমানজনক তা আমি ছাড়া আর কেউ জানে না। আমার মতো আরও ১৮৪ জন শিল্পী যারা চিঠি পেয়েছেন তারাও বুঝতে পারছেন কতোটা অপমানিত হয়েছেন।
*তিনি বলেন, হয়তো ভাগ্যে থাকলে আবার ফিরবো কাজে। বর্তমান সমিতির একটি মাত্র ব্যক্তির কারণে, তার পলিটিক্স, তার নোংরামি এবং অনেক রকম অপকর্মের অসহযোগিতার কারণে আমাকে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে। শুধু আমি না, আমাদের মতো রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, নিপুণ, আমাদের সকলকে ব্যবহার করে, আমাদের কাঁধে বন্দুক রেখে যে এই চেয়ারটিতে বসেছে; সে বিভিন্ন রকম অপকর্ম করার চেষ্টা করেছে, যেখানে আমি সায় দিইনি বা আমরা সায় দিইনি। যার কারণে আমি ভিকটিম।
*তিনি আরও বলেন, আমি জানের ভয়ে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। আমার সদস্য পদ বাতিলের চিঠি এখনো আমার কাছে আছে। যখন আমি চিঠিটি পাই তখন আমি স্পিচলেস ছিলাম। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই, আমি আর এসব নোংরামির মধ্যে কখনো যাবো না। যদি কখনো পরিবেশ ভালো হয়, এই নোংরা মানুষগুলো চলচ্চিত্র থেকে সরে যায়, তখনই আবার কাজ করবো। আমরা জানি আমাদের এফডিসি জাতির জনকের হাতে গড়া এফডিসি। আমাদের এফডিসি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের এফডিসি।
*পপি বলেন, সবার কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করছি, আমরা যে ভুল করেছি আপনারা তা করবেন না। সঠিক মানুষ পছন্দ করবেন যাতে চলচ্চিত্র বাঁচে। চলচ্চিত্র বাঁচলে আমরা বাঁচবো। আমরা পরিবর্তন চাই। আমাদের ভুলের কারণে মানুষ আজ বিপদগ্রস্ত। আপনারা সবাই কাঞ্চন, নিপুন, রিয়াজ ভাইদের একটাবার সুযোগ দিন।
*তিনি বলেন, আমরা কাজ চাই। আমার কাছে মনে হয়েছে, অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ভুল মানুষকে নির্বাচন করেছি। যার কারণে অনেকগুলো মানুষ বিপদের মুখে। ইন্ডাস্ট্রি বিপদের মুখে। সমালোচনার মুখে। এসব থেকে মুক্তি পেতে হলে, ইলিয়াস কাঞ্চন, নিপুন তায়েব ভাই, রিয়াজ যারা যারা এই প্যানেলে আছেন। তাদেরকে একটি সুযোগ দেওয়া উচিত। অন্ততপক্ষে তারা শিল্পীদের অসম্মানিত করবেন না। চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচানোর জন্য কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের সবাইকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।