মাহবুব তালুকদার:নির্বাচনে মোটেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই
একাদশ সংসদ নির্বাচনে মোটেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সোমবার নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মোটেই মনে করিনা নির্বাচন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
সোমবার সকালে তার কাছে সাংবাদিকরা লিখিত প্রশ্ন রাখেন। পরে বিকেলে লিখিত উত্তর দেন তিনি। সিইসি বলেছেন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আপনি কী তার বিরোধিতা করছেন?-এমন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আমি কখনো তার বক্তব্যের বিরোধিতা করি না। তিনি তার কথা বলেন। আমি প্রয়োজনে আমার ভিন্নমত প্রকাশ করি। আপনারা তো সাংবাদিক। আপনারা দেশের সব খবর রাখেন। সবকিছু দেখেন। আপনারা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, নির্বাচনে এখন লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি না, তাহলে উত্তর পেয়ে যাবেন। সারাদেশ থেকে বিরোধী দলের প্রচারে বাধা দেয়ার নানা অভিযোগ আসছে। এ অবস্থায় অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন কী সম্ভব?- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আশাবাদী মানুষ। এখনও যে সময়টুকু আছে তাতে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির বিচারকদের আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করা উচিত। আমি মনে করি, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জকভাবে পাল্টে যাবে।
সিইসি বলেছেন, সবদলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে। আপনিও কি তাই মনে করেন?- এমন প্রশ্নে মাহবুব তালুকদার বলেন, সবদল অংশগ্রহণ করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কিনা এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কি না? নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো লাভ নেই।
নির্বাচনে জনপ্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে?- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন আমরা সরাসরি করি না। রিটার্নিং অফিসার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে। তাদের বাহিনীর সদস্যরা কতটা তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা তারা বলতে পারবেন।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে মাহবুব তালুকদার বলেন, আমার বক্তব্য হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচন এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রার্থী, ভোটার এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ আইনের বাইরে যাবেন না। আইনকে নিজস্ব ধারায় চলতে দিন। নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলুন। নির্বাচনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সহায়তা করুন।
ইত্তেফাক