ধর্ষণ হত্যা লড়াইয়ে অংশ নয় বিনা বিচারে
ধর্ষককে হত্যা নয়, আইনের আওতায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে ন্যায্য বিচারের দাবি জানিয়েছে নারীপক্ষ নামের একটি সামজিক সংগঠন।
রোববার নারীপক্ষের আন্দোলন সম্পাদক ফরিদা ইয়াছমিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন কায়দায় ধর্ষণ, সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টা এবং ধর্ষণজনিত হত্যা ও অত্মহত্যার খবর আসছে গণমাধ্যমে। দেড় বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা- কেউই রেহাই পাচ্ছে না এই নৃসংশতা থেকে।
একটি পত্রিকার খবরের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি এই ৩৪ দিনে ৪২টি ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার খবর প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জনই শিশু ও কিশোরী। আমরা এই অবস্থার অবসান চাই এবং তার জন্য প্রয়োজন বহুমুখী উদ্যোগ।
ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বদিচ্ছা ও পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রয়োজন নারীর ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে সক্রিয় সামাজিক আন্দোলন, প্রয়োজন প্রতিটি মানুষের মধ্যে এই সহিংসতা বরদাস্ত না করার মানসিকতা গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন প্রতিটি ভুক্তভোগীর ঘুরে দাঁড়াবার শক্তি অর্জনে তার পাশে থাকার প্রস্তুতি ও তৎপরতা। বিনা বিচারে ধর্ষককে হত্যা করা এই লড়াইয়ের অংশ নয়।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কে বা কারা একের পর এক ধর্ষণের মামলার চিহ্নিত আসামিকে হত্যা করছে। গত এক মাসে ধর্ষণে অভিযুক্ত অন্তত তিন ব্যক্তির মরদেহের গলায় ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ চিরকুট লাগানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। এতে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা। আইনকে নিজের হাতে তুলে নিয়ে এরা জন্ম দিচ্ছে আরও অপরাধের। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, একজন ধর্ষকের জন্য এটাই উচিত শাস্তি, কারণ বেশিরভাগ ধর্ষণ মামলাতেই দ্রুত এবং ন্যায়বিচারের অভাব পরিলক্ষিত হয়।
তিনি আরও বলেন, নারীপক্ষ বিচার বহির্ভূতভাবে ধর্ষককে হত্যা করা সমর্থন করে না। অন্যদিকে, বিচার বহির্ভূতভাবে ধর্ষককে হত্যার দায় ধর্ষণের শিকার নারীর পরিবারকে করে তোলে আরও অসহায়। এমন পরিস্থিতিতে নারীপক্ষের দাবি, ধর্ষককে হত্যা নয়, আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচার করা হোক। ধর্ষককে হত্যা এবং সেইসঙ্গে ধর্ষণসহ নারীর ওপর সংঘটিত প্রতিটি অপরাধের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার সমাপ্ত করার দাবি জানাই।