হৃদযন্ত্রের জন্য ডিম কি ঝুঁকিপূর্ণ ?
কেউ বলছে ভালো কেউ বলছে হৃদযন্ত্রের সমস্যার জন্য ডিম দায়ী। তাই বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন সেটা জানা থাকা ভালো।
দৈনিক গ্রহণের পরিমাণ এবং কীভাবে খাওয়া হচ্ছে- এগুলোর ওপর অনেকখানি নির্ভর করে ডিম ক্ষতি করবে নাকি করবে না।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে, ‘জেএএমএ’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার ফলাফল নিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয় বেশি ডিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
‘অ্যাসোসিয়েশন অফ ডায়েটারি কোলেস্টেরল অর এগ কনজাম্পশন উইথ ইনসিডেন্ট অফ কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ অ্যান্ড মর্টালিটি’ নামের এই গবেষণার জন্য ২৯,৬১৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে সাড়ে ১৭ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
গবেষকরা এরপর সিদ্ধান্তে আসেন যে, “অতিমাত্রায় ভোজ্য কোলেস্টেরল বা ডিম খাওয়ার সঙ্গে হৃদরোগের গুরুতর ঝুঁকি জড়িত এবং রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণের অন্যান্য কারণকেও তা প্রভাবিত করে।”
সহজভাষায় দৈনিক ৩শ’ মি.লি.গ্রাম কোলেস্টেরল গ্রহণ করলে হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে।
একটি ডিমে থাকে ১৮৬ মি.লি.গ্রাম কোলেস্টেরল। তাই দিনে দুই বা ততোধিক ডিম খেলে হৃদযন্ত্র ঝুঁকিতে পড়বে।
আমেরিকার খাদ্যাভ্যাস নীতিমালা অনুযায়ী একজন সুস্থ মানুষকে দৈনিক একটি ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর তা কুসুম বাদ দিয়ে খেতে হবে এমন কোনো কথা বলা নেই।
প্রোটিনের পাশাপাশি ডিমে থাকে ওমেগা থ্রি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং কোলেস্টেরল।
করণীয় কী?
ভারতীয় পুষ্টিবিদ মানসি চাত্রাথ বলেন, “যদি একটি পুরো ডিম খান, তবে খাদ্যাভ্যাসের অন্যান্য কোলেস্টেরলের উৎস যেমন- মাছ, মাংস খাওয়ার পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি ডিম কীভাবে খাচ্ছেন সে ব্যাপারেও ভাবতে হবে। ভাজা ডিমের তুলনায় সিদ্ধ ডিমে চর্বি কম হয়। তাই ডিম খাবেন না বাদ দেবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ডিম ছাড়া অন্যান্য খাবার থেকে দিনে কতটা কোলেস্টেরল আর ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ গ্রহণ করছেন সেটা পরিমাপ করতে হবে।”
মুম্বাইয়ের এশিয়ান হার্ট ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সন্তোশ কুমার ডোরা বলেন, “হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ শুধু ডিম নয়, খাদ্যাভ্যাসের আরও অনেক খাবারই আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। দিনে কতটুকু প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বি গ্রহণ করছি তা নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। চর্বির মাত্রা নিয়ে ভাবার সময় ‘স্যাচুরেইটেড’ ও ‘আন-স্যাচুরেইটেড’ ফ্যাট বা চর্বি নিয়ে আলাদাভাবে ভাবতে হবে। অতিরিক্ত ‘কার্বোহাইড্রেইট’ এবং ‘স্যাচুরেইটেড’ চর্বি অস্বাস্থ্যকর।”
তাই ডিম নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার আগে চিকিৎসকের কাছে যান, জেনে নিন কোন খাবারগুলো আপনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ আর কোনগুলো প্রয়োজনীয়। আর দিনে একটি ডিম খাওয়া আপনার কোনো ক্ষতিই করবে না।