অভিনেতা টেলিসামাদ আর নেই
বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তিমান অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান টেলি সামাদের মৃত্যুর খবর প্রিয়.কমকে নিশ্চিত করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন টেলি সামাদ। গত পরশু দিন (৪ এপ্রিল) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে চলতি বছরের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বেশ কিছুদিন ভর্তি ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে সম্প্রতি বাসায় ফিরেন তিনি। সে সময় তিনি ‘স্বাভাবিক জীবনে’ ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন চিকিৎসকরা।
তারও আগে গত ৪ ডিসেম্বর বুকে ইনফেকশনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে টেলি সামাদ প্রথমে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সেখানে তার চিকিৎসা চলে। এরপর টেলি সামাদকে ভর্তি করা হয় বিএসএমএমইউতে। শুরুতে কেবিনে রাখা হয়, পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
এর আগে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টেলি সামাদের বাইপাস সার্জারি করা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। দেশে আসার পর অক্টোবর ও নভেম্বরে দুই দফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গত বছরের ২০ অক্টোবর জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল তার বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে।
কমেডিয়ান হিসেবে বেশিরভাগ দর্শক টেলি সামাদকে চিনলেও প্রায় ৪০টির বেশি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। ‘মনা পাগলা’ ছবির সংগীত পরিচালনাও করেছেন তিনি।
১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ দিয়ে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় টেলি সামাদের। গত চার দশকে ৬০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সর্বশেষ অভিনীত চলচ্চিত্র ছিল ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জিরো ডিগ্রি’। ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি ঢাকার বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন এই অভিনয়শিল্পী।
মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠ নয়াগাঁও এলাকার সন্তান টেলি সামাদ। প্রকৃত নাম আবদুস সামাদ থেকে পরে টেলি সামাদ নামেই পর্দায় পরিচিতি গড়ে ওঠেন তিনি। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা টেলি সামাদের বড়ভাই বিখ্যাত চারুশিল্পী আব্দুল হাইয়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়।