অভিনেত্রী নওশাবার ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ
নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে ফেসবুক লাইভে গুজব ছড়ানোর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলায় মডেল অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমদের ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ ও আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. দিদার হোসেনের আদালত শুনানি শেষে ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।
ফলে মামলাটিতে আগামী ধার্য দিন থেকে নওশাবাকে আদালতে উপস্থিত হতে হবে না। আইনজীবীই তার হয়ে হাজিরা দেবেন। তবে তা মামলাটিতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
মামলাটিতে এ দিন পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না করায় আগামী ২৮ মে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত।
মামলাটিতে গত বছরের ৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে নওশাবাকে আটক করে র্যাব। এরপর ৫ আগস্ট চারদিন এবং ১০ আগস্ট দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১৩ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০ আগস্ট ঈদুল আজহার আগের দিন সিএমএম আদালত তার জামিন মঞ্জুর করলে তিনি কারামুক্ত হন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এ আসামি নিজের মোবাইল থেকে নিজ নামীয় ফেসবুক আইডিতে গত বছরের ৪ আগস্ট বেলা চারটার দিকে উত্তরার ১৩নং সেক্টরের ৪নং রোডের ২নং বাড়ি থেকে অত্যন্ত আবেদনময়ী কন্ঠে লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করেন। বলেন, `আমি কাজী নওশাবা আহমেদ, আপনাদের জানাতে চাই, একটু আগে জিগাতলায় আমাদের ছোট ভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। আপনারা সবাই একসাথে হোন। প্লিজ ওদেরকে প্রটেকশন দেন। বাচ্চাগুলো আনসেভ অবস্থায় আছে। প্লিজ আপনারা রাস্তায় নামেন। প্লিজ আপনারা রাস্তায় নামেন এবং ওদের প্রটেকশন দেন। এটা আমার রিকোয়েস্ট। আমি এদেশের একজন মানুষ, নাগরিক হিসেবে আপনাদের কাছে রিকোয়েস্ট করছি যে, জিগাতলায় একটু আগে একটি স্কুলে একটি ছেলের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। একটু আগে ওদেরকে অ্যাটাক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেটা করেছে। প্লিজ প্লিজ ওদেরকে বাচান। তারা জিগাতলায় আছে। আপনারা এখই নামবেন। আপনাদের বাচ্চাদেরকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান। এটা আমার রিকোয়েস্ট। যে পুলিশরা আছে, তারা অবশ্যই বাচ্চাদের প্রটেকশন দেন। আপনারা প্লিজ কিছু একটা করেন। সরকার যদি দায়িত্ব নিতে না পারে। তাহলে জনগণ কিসের জন্য আছেন আপনারা। আমরা একাত্তরে পেরেছি, বায়ান্নতে পেরেছি, এবারও পারবো। আমাদের দরকার নাই কাউকে।‘
তার এই আহ্বান মুহুর্তের মধ্যে দেশি-বিদেশি সামাজিক ও ইলেকট্রনিক্স মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফলে জনমনে আতঙ্ক ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা তার এই মিথ্যা প্রোপাগান্ডার উৎস জানতে ফোন করলে তিনি তার সপক্ষে সঠিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। প্রকৃতপক্ষে ওই সময় জিগাতলায় ওই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের ভাবমূতি ক্ষুন্ন এবং জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করতে এ ধরনের মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করেন।