নুসরাতকে ছাদে ডেকে নেওয়ার কথা স্বীকার করলেন পপি
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দেওয়ার দিন পরীক্ষার হল থেকে ছাদে ডেকে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তাঁর সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা। নুসরাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরফ উদ্দিনের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন পপি। ৫ দিনের রিমান্ড শেষে উম্মে সুলতানা পপিকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এ সময় পপি আদালতে স্বীকার করেছেন যে তিনি ঘটনার দিন রাফিকে পরীক্ষার হল থেকে ছাদে ডেকে নিয়ে যান এবং তিনি হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন। পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল এসব তথ্য দিয়েছেন। পপি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার শ্যালিকার মেয়ে।
বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল আরো জানান, এ মামলার অপর আসামি জাবেদ হোসেনের সাতদিনের রিমান্ড শেষে একই আদালতে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ ছাড়াও পিবিআই কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি রুহুল আমিন পিবিআই হেফাজতে রয়েছেন।
নুসরাত জাহান রাফির হত্যা মামলায় মোট ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৩ জনকে আদালত বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পিবিআই সুবিধাজনক সময়ে ফেনী কারাগার থেকে এদের পিবিআই হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠাচ্ছে। এ পর্যন্ত চারজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফেনীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় মুখোশ পরা চার/পাঁচজন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।