24.4 C
Dhaka
March 11, 2025
International

বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম দুই মায়ের ডিম্বাণু নিয়ে এক সন্তানের জন্ম

বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম দুই মায়ের ডিম্বাণু নিয়ে এক সন্তানের জন্ম

বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম দুই মায়ের ডিম্বাণু নিয়ে এক সন্তানের জন্ম

দুই মায়ের এক সন্তান, না এটা বিখ্যাত কালীদাস পণ্ডিতের ধাঁধা নয়। আসলেই দুই মায়ের কোল আলো করে এসেছে সন্তান। অবাক করার মতই এমন ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম দুই মায়ের ডিম্বাণু নিয়ে এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন চিকিৎসকরা। দুই নারীর ডিম্বাণুর সঙ্গে এক পুরুষের শুক্রাণুর মিলন ঘটিয়ে এ সফলতা পেয়েছে গ্রিস ও স্পেনের চিকিৎসকদের একটি দল। ৯ এপ্রিল জন্ম নেওয়া শিশুটির ওজন দুই দশমিক ৯ কেজি। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, শিশু ও তার জন্মদাত্রী মা দুজনেই সুস্থ আছেন।

বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম দুই মায়ের ডিম্বাণু নিয়ে এক সন্তানের জন্ম
বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম দুই মায়ের ডিম্বাণু নিয়ে এক সন্তানের জন্ম

চিকিৎসকরা পরীক্ষামূলকভাবে আইভিএফ পদ্ধতি ব্যবহার করে দুজন নারীর ডিম্বাণু ও একজন পুরুষের শুক্রাণুর সমন্বয় ঘটিয়ে প্রক্রিয়াটি সফল করেন। তারা জানান, এই ঘটনায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছে। এতে করে বিশ্বজুড়ে অনুর্বর নারীরাও গর্ভধারণে সক্ষম হবেন।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, গ্রিসের ৩২ বছর বয়সী এক নারী কোনোভাবেই মা হতে পারছিলেন না। টেস্টটিউব পদ্ধতিতেও তিনি চার দফায় চেষ্টা করেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি। মা হতে তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য গবেষকেরা নতুন কৌশল অবলম্বন করেন। ওই নারীর সমস্যা ছিল কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ায়। এ ধরনের সমস্যায় মায়ের গর্ভেই সন্তান প্রাণঘাতী ওই মাইটোকন্ড্রিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এ বাধা এড়ানোর জন্য গবেষকেরা প্রথমে মায়ের ডিম্বাণুর নিউক্লিয়াসদাতা নারীর ডিম্বাণুতে স্থাপন করেন। পরে তা বাবার শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা হয়। এরপর নিষিক্ত ভ্রূণটি মায়ের গর্ভে স্থাপন করেন।

গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন নুনো কস্টা-বোরহেস। তিনি বলেন, তাঁদের কৌশলে জন্ম নেওয়া শিশুর জিনের ৯৯ শতাংশই এসেছে তার মা-বাবা থেকে। ১ শতাংশ জিন এসেছে দাতা নারীর দেহ থেকে।

তবে গবেষকদের এই কৌশল নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্ক রয়েছে। যুক্তরাজ্যের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ তো এ গবেষণা নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্নও তুলেছেন। তাদের মতে, এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অনুচিত, এ নিয়ে গবেষণা হওয়াই উচিত নয়।

কয়েকজন চিকিৎসকের বিশ্বাস, এই প্রযুক্তিতে আইভিএফ-এর উপযোগিতাও ফুটে ওঠে। তারা বলেন, পুরো বিষয়টি হচ্ছে মাইটোকন্ড্রিয়া কেন্দ্রিক। এগুলো হচ্ছে শরীরের প্রতিটি কোষের ভেতরে থাকা ক্ষুদ্র কম্পার্টমেন্ট। এরা খাবারকে শক্তিতে রূপান্তর করে। মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগ হলে, তারা অকার্যকর হয়ে পড়ে। তাই কোনো মায়ের ডিএনএর সঙ্গে কোনো দাতা নারীর ডিএনএর সংমিশ্রণ ঘটিয়ে মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

গ্রিসে যে নারীর ওপর আইভিএফ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে তার বয়স ৩২ বছর। তিনি আইভিএফ-এর চারটি ব্যর্থ প্রক্রিয়া সহ্য করার পর পঞ্চমবার গর্ভধারণে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু তার গর্ভে জন্ম নেওয়া ছেলে সন্তানটির শরীরে তার নিজের মাইটোকন্ড্রিয়া সম্বলিত ডিএনএর পাশাপাশি অন্য একজন নারীর অল্প পরিমাণ ডিএনএও রয়েছে।

ইনস্টিটিউট অব লাইফ ইন এথেন্স-এর প্রেসিডেন্ট ড. প্যানাজিয়োটিস পিসাথাস বলেন, একজন নারীর নিজের জেনেটিক উপকরণ দিয়ে মা হওয়ার যে অধিকার তা আজ বাস্তবে পরিণত হল। আমরা এখন এমন একটি অবস্থানে আছি যে, একাধিকবার আইভিএফ ব্যবহার করে ব্যর্থ হওয়া বা বিরল মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগে আক্রান্ত নারীরাও এখন থেকে সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারবেন।

এই প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করা গ্রিক ও স্প্যানিশ চিকিৎসকদের দলটি জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক এই প্রক্রিয়ায় সন্তান জন্মদানের জন্য আরও ২৪ জন নারী প্রস্তুত রয়েছেন।

Related posts

Corona virus update and latest news || Monday, July 27, 2020

Lutfur Mamun

মা মেয়ে একটি বিমানের পাইলট হিসেবে ছবি ভাইরাল

Lutfur Mamun

করোনা ভাইরাস আপডেট ও সর্বশেষ খবর , শনিবার, ১৩ জুন ২০২০

Lutfur Mamun

Leave a Comment