ভারতে নির্বাচনী প্রচারণা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ফেরদৌস
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নেয়ায় ভারতজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস আহমেদকে নিয়ে। ইতোমধ্যে মডেল কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙার অভিযোগে ভারতীয় ভিসা বাতিল হয়েছে তার। মঙ্গলবার রাত ১০টায় ঢাকায় ফেরেন তিনি। দেশে ফেরার পর বিষয়টি নিয়ে নীরব ছিলেন ফেরদৌস। আজ বুধবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা।
ফেরদৌস এক বার্তায় বলেন, ‘আমি চিত্রনায়ক ফেরদৌস। অভিনয় শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয় শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সবার মধ্যে মেলবন্ধ তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভালো লাগে আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার ভারত বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি দেশ।
১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। পাশাপাশি ভারতের জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। এখানের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক আমার বন্ধু। যাদের সাথে আমি সবসময় হৃদ্যতা অনুভব করি। এজন্য বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে আমি এখানে চলে আসি।
ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সাড়া বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময় আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সকলের মতো আমারও আগ্রহের জায়াগায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবাগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সাথে অংশগ্রহণ করি। এটা পূর্বপরিকল্পনার কোন অংশ ছিল না।
শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কারো প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোন বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারো প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সব রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
আমি আগেও বলেছি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসা আমাকে আবেগ তাড়িত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সাথে এই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল। যেটা থেকে অনেক ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং অনেকে ভুলভাবে নিয়েছেন। আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক।
একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনভাবেই উচিত নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রর্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সবাই আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’