কারফিউ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ সুদানে
সামরিক পরিষদের দেয়া কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছে সুদানের বিক্ষোভকারীরা। রাজধানী খার্তুমে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে নতুন সামরিক পরিষদের জারি করা কারফিউয়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।
প্রায় তিন মাস ধরে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছে সুদানের জনগণ। গত ডিসেম্বরে দেশটির বাজারে রুটির দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু করে সাধারণ মানুষ। তাদের এই বিক্ষোভ ক্রমান্বয়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী।
এর কয়েক ঘণ্টা পরেই টেলিভিশনে বশিরকে উৎখাতের ঘোষণা দেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আওয়াদ ইবনে আউফ। তিনি আগামী তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে সংবিধান স্থগিত ঘোষণা করেন। আগামী দুই বছর দেশটির ক্ষমতা সামরিক পরিষদের হাতেই থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়।
নতুন এই অস্থায়ী সরকারের নেতৃত্ব দেবেন আওয়াদ ইবনে আউফ। দুই বছরের মধ্যে দেশটির সংবিধানে পরিবর্তন আনা হবে বলেও জানানো হয়েছে। তবে এই সামরিক পরিষদকে আগের সরকারেরই অংশ হিসেবে ঘোষণা করে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা জনপথ ছাড়তেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বিক্ষোভকারী এবং সেনাবাহিনীর মুখোমুখি অবস্থানে নতুন করে সহিংসতা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী এবং মিলিশিয়ারা একে অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে পারে বলেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার জন্য সুদানের আকাশসীমা বন্ধ থাকবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। শুক্রবার আকাশসীমা খুলে দেয়া হলেও স্থলসীমা এবং সমুদ্রসীমা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে সামরিক পরিষদ।
বৃহস্পতিবার ৭৫ বছর বয়সী বশিরকে গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই উল্লাসে মেতে ওঠে বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু তাদের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সামরিক পরিষদের ক্ষমতা গ্রহণের ঘোষণায় আন্দোলনকারীরা উল্লাস বন্ধ করে সামরিক বাহিনীর সদর দফতরের বাইরে অবস্থান নেয়।
সুদানের প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশনের সারা আবদেল আজিজ বলেন, এটা আগের শাসনেরই ধারাবাহিকতা। তাই আমাদের প্রয়োজন লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানানো।