কুমার বিশ্বজিৎ : সুরের মানুষটা অভিমান করেই চলে গেলেন
‘মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুদ্ধে যাওয়া সহজ কথা নয়। তিনি যুদ্ধে গিয়েছিলেন। দেশকে ভালোবেসে অসুর বধে যুক্ত হয়েছিলেন। যুদ্ধ করে ফিরে দেশপ্রেমের গান করেছেন। সারা জীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বেঁচেছেন। ভাইকে হারিয়েছেন।
ঘরে একাকী বন্দি হয়ে থেকেছেন বছরের পর বছর। সুরে ফিরে এসে চারপাশে অসুর হচ্ছে বলেই অভিমান করেই চলে গেলেন সুরের মানুষটা।’ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের লেখা ও সুর করা অনেক গান গেয়েছেন তিনি। সেসব বুধবার দুপুরে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন,‘ আমি তার লেখা ও সুর করা অনেক গান গেয়েছি। যেমন একটা প্রেমের গান ‘ও ডাক্তার’। অসাধারণ তার বর্ণনা। একটা হসপিটালকে গানটির গল্প।
এরপর ‘জ্বলেরে জ্বলে’ , ‘কৃষ্ণ কৃষ্ণ’ গানটির কথাই ধরা যাক। যেখানে কৃষ্ণের বাঁশিটা সে ধার চাচ্ছে। ‘ আমার একটা রাধা ছিল, সে পরাণের আধা ছিল, আগে অনেক চায় তো বেশি, এখন চায় না আর, কৃষ্ণ কৃষ্ণ তোর বাঁশিটা দে না আমায় ধার।’ কত দূরদর্শিতা থাকলে এমন গান লেখা যায়। তার এমন অনেক গান সম্পর্কে আপনারা জানেন ।
অভিমান করেই গান থেকে অনেক দিন দূরে ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। এই প্রসঙ্গে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আজে-বাজে গানের চাপে বুলবুল ভাইয়ের মতো লোক যদি কাজ করতে না পারে, তার অভিমান হবেই। আমার চেয়ে অযোগ্য লোক যদি কাজ বেশি করে তাহলে কষ্ট পাওয়ারই কথা। গানের নামে এখন কী হচ্ছে সবাই জানেন।’
বুধবার দুপুরের আগে কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে সুরের বুলবুলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ। সেখানে কথা হয় তার সঙ্গে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনেও (বিএফডিসি) জানাজা অনুষ্ঠিত হয় সঙ্গীতজ্ঞ ও মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের। জানাজা শেষে বুধবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় বুলবুলের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়। ১১টার দিকে গার্ড অব অনার শেষে শহীদ মিনারের পাদদেশে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।