-
বিধ্বস্ত খুলনা শাকিব-জাজাইয়ের
ব্যাট হাতে আরও একবার ঝড় তুললেন হযরতউল্লাহ জাজাই। এতে ঢাকা ডায়নামাইটস পেল ১৯২ রানের বড় পুঁজি। সাকিব আল হাসান দেখালেন তার স্পিন ভেলকি, এতে বড় লক্ষ্য তাড়ায় হালে পানি পেল না খুলনা টাইটান্স। মিরপুরে মঙ্গলবার ঢাকার এই যুগলের দুরন্ত পারফরম্যান্সে রীতিমতো বিধ্বস্ত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল, মাত্র ৮৭ রানে অলআউট হয়ে তারা দেখেছে ১০৫ রানের বড় পরাজয়। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচেও হেরেছিল খুলনা। অন্যদিকে, রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে আসর শুরু করা সাকিবের ঢাকা অব্যাহত রাখল জয়ের ধারা।
আগের ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডাসের্র বিপক্ষে হারের আগে দারুণ লড়াই গড়ে তুলেছিল খুলনা। ঢাকার বিপক্ষে দলটির পারফরম্যান্সে লড়াইয়ের ছিঁটেফেঁাটাও থাকল না। এক কথায় অসহায় আত্মসমপর্ণ করেছে তারা। জাজাই-রনি-পোলাডের্দর তাÐবে বোলিংটা ভালো হয়নি, ফিল্ডিংটাও ছিল বাজে, ব্যাটিংটা তো ছাড়িয়ে গেল সবকিছুকেই। সাকিব আর নারিনের ঘূণিের্ত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল খুলনার ব্যাটিং লাইনআপ। জুনায়েদ সিদ্দিকির ব্যাটে ভালো শুরুর পরও ৩৩ রানের ব্যবধানে শেষ ৭ উইকেট হারায় তারা, অলআউট হয়ে যায় ৭ ওভার হাতে রেখে।
পল স্টারলিংয়ের ব্যাটে ঝড় উঠেনি এদিন, ম্যাচে নিজের তৃতীয় বলেই খুলনার আইরিশ ওপেনারকে সাজঘরের পথ দেখান সাকিব। এরপর জুনায়েদকে যখন তিনি দ্বিতীয় শিকার বানান, খুলনার স্কোর ৩৫/৩। এর ৩১ রানই আসে জুনায়েদের ব্যাট থেকে। এরপর খুলনার ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুতে পেরেছেন দুইজনÑ নাজমুল হোসেন শান্ত (১৩) আর আরিফুল হক (১৯)। জহুরুল (১), মাহমুদউল্লাহ (৮), ডেভিড উইসা (৬) হয়ে রইলেন নিজেদের ছায়া। সাকিব ৩ উইকেট নিলেন ১৮ রান খরচায়। ব্যাটিংয়ে ১৪ বলে দলের পুঁজিতে ১৯ রান জোগান দেয়া নারিন ২ উইকেট নিয়েছেন ২৪ রান খরচায়।
নারিনকে নিয়ে ইনিংসের সূচনায় নামা জাজাই শুরু থেকেই ঝড় বইয়ে দেন খুলনার বোলারদের ওপর। এতে পঁাচ ওভারেই ৬৭ রান তুলে ফেলে ঢাকা। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে উইসার শিকার নারিন। ১২ রানে লংঅনে সহজ ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া জাজাইয়ের ব্যাট তখনো খোলা তরবারী। আফগান তারকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাট চালাচ্ছিলেন রনি তালুকদারও। তাদের যুগলবন্দিতে ৮.৫ ওভারেই স্কোরবোডের্ ১০০ রান হয়ে যায় ঢাকার। চলতি বিপিএলে কোনো দলের থেকে ২০০ ছাড়ানো পুঁজি দেখতে পাওয়াটাকে তখন মনে হচ্ছিল সময়ের অপেক্ষা।
সেই অপেক্ষা ঘুচেনি। তবে ‘দিনের প্রথম ম্যাচটি লো স্কোরিং হয়’Ñ সেই ধারায় ঠিকই ছেদ টেনেছে ঢাকা। দারুণ ব্যাটিং প্রদশনীের্ত গড়েছে বড় পুঁজি। সেই পুঁজিটাও প্রত্যাশিত মাত্রা পায়নি মিডল অডাের্র হঠাৎ ছন্দপতনে। যার শুরুটা ডিপ মিডউইকেটে স্টারলিংয়ের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যাওয়া রনিকে দিয়ে। ৩টি চার আর ২টি ছক্কায় ১৭ বলে ২৮ রান করার পর মাহমুদউল্লাহর বলে আরিফুলের হাতে ধরা পড়েন রনি। স্টারলিংয়ের করা পরের ওভারে পরপর দুই বলে বিদায় নেন জাজাই আর সাকিব। স্বভাবতই সাকিবের রানের খাতা খোলা হয়নি। তবে আউট হওয়ার আগে ম্যাচসেরা জাজাইয়ের নামের পাশে শোভা পাচ্ছিল ৫৭ রান।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি হাকানো জাজাই এদিন খেলেছেন ৩৬ বল, হাকিয়েছেন ৫টি ছক্কা আর ৩টি চার। জাজাই ফেরার পরও ঢাকার ইনিংসে (১৪টি) ছক্কাবৃষ্টি অব্যহত ছিল পোলাডর্ আর আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে। তবে দ্রæত তিন উইকেট পতন ঘটায় শুরুতে কিছুটা দেখেশুনে খেলেছেন দুই ক্যারিবিয়ান। তাদের ওই সাবধানী মনোভাবের কারণেই মূলত ২০০ ছুতে পারেনি ঢাকার পুঁজি। তবে মাঝের ধাক্কা সামলে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা ১৯২ পযর্ন্ত যেতে পেরেছে সমান দুটি করে চার আর ছক্কায় ১৬ বলে পোলাডের্র ২৭ আর তিন ছক্কায় রাসেলের ২২ বলে ২৫ রানের ইনিংসে ভর করেই।
আগের ম্যাচের মতো এদিন ঝড় উঠেনি শুভাগত হোমের ব্যাটে। ৭ বল খেলে ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আরেক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান ৬ বলে করেছেন ৮ রান। শেষ ৩ ওভার থেকে তাই ২৪ রানের বেশি আসেনি। বড় ব্যবধানে জিতে যাওয়ার পর ওটা নিয়ে এখন আর হয়তো আক্ষেপ নেই ঢাকার।
সূএ- যায়যায়দিন