সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী লাইফ সাপোর্টে
অনেকদিন ধরেই ফুসফুস ক্যান্সারসহ বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছেন দেশের বর্ষীয়ান সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। মাঝে খানিকটা সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন গানে। ফেসবুকে ঘোষণা দিয়েছিলেন নিয়মিত আবার গান করতে চান।
সবাই যখন এই কিংবদন্তির নতুন শুরু নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন এমনই সময় এলো মন খারাপের খবর। গুরুতর অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আলাউদ্দিন আলীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পুরনো অসুখেই কাবু হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই সঙ্গীত পরিচালককে। তার পরিবার সবার কাছে দোয়া চেয়েছে।
এদিকে আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেল, রাত ১২টা ৫ মিনিটে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আলাউদ্দিন আলীকে। চেকআপ শেষে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
গানের নন্দিত মানুষ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মৃত্যুবরণ করেছেন মঙ্গলবার। তার শোকের ফাঁক গলে আলাউদ্দিন আলীর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে লাইফ সাপোর্টে থাকার খবরটি সবার মনে দুশ্চিন্তার তৈরি করেছে।
প্রসঙ্গত, আলাউদ্দিন আলী ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি থানার বাঁশবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আলাউদ্দিন তার পিতা ওস্তাদ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে প্রথম সঙ্গীতে শিক্ষা নেন। ১৯৬৮ সালে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন।
এরপর তিনি প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। আলাউদ্দিন আলী ১৯৭৫ সালে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ছবির জন্য ১৯৭৯ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
তার সুর করা গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্যা একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ভালোবাসা যতো বড়ো জীবন তত বড় নয়, দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়, হয় যদি বদনাম হোক আরো, আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার ইত্যাদি কালজয়ী সব গান।