ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি জানালেন ফখরুল, কামালের সঙ্গে বসে
কামাল হোসেনসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্য নেতাদের সঙ্গে বসার পর নির্বাচনে ‘কারচুপির’ প্রতিবাদে কর্মসূচি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার মতিঝিলে আইনজীবী কামাল হোসেনের অফিসে এই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ছাড়াও জেএসডির আ স ম আবদুর রব, আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, শহিদুল্লাহ কায়সার, জাহেদ-উর রহমান, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, জগলুল হায়দার আফ্রিক, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ইকবাল সিদ্দিকী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে ফেরার পরদিন বুধবার গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য ‘শতভাগ অটুট আছে’ বলে মন্তব্য করার পরদিন এই বৈঠক হল।
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি এবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে গত ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে গণফোরামসহ ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য দলের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নেতারাও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এ নিয়ে সমালোচনার মুখে কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে জামায়াত নেতাদের প্রার্থী করা ‘ভুল’ ছিল। তাছাড়া বিএনপি থেকে তাদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা তাকে জানানো হয়নি।
শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের এই বক্তব্যের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির কোনো নেতা ছিলেন না। এরপর ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
এদিকে ওই বৈঠকের পর কামাল হোসেন চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলে তার দল থেকে নির্বাচিত দুজন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার ঘোষণা দিলে ঐক্যফ্রন্টে মতভিন্নতার গুঞ্জন আরও ডালপালা মেলে।
বৃহস্পতিবারের এই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, তার দলের নেতারা সাংসদ হিসেবে শপথ নেবেন না।
তবে কয়েক দিন আগে শপথ গ্রহণের আগ্রহ জানানো সুলতান মো. মনসুর আহমেদ ও মোকাব্বির খান এই বৈঠকে ছিলেন না।
বিকালে এই বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব ও ফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘ভোট ডাকাতির’ প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি গণশুনানির কর্মসূচি দিয়েছেন তারা।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হযেছে ৩০ ডিসেম্বর যে ভোট ডাকাতির প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে এর প্রতিবাদে আগামী ৬ ফেব্রয়ারি বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে।
‘“২৪ ফেব্রুয়ারি প্রার্থী ও ভুক্তভোগীদের অংশগ্রহণে গণশুনানি হবে। এর স্থানটা পরে জানানো হবে।”
বুধবার একাদশ সংসদের যাত্রা শুরুর দিন প্রেস ক্লা্বের সামনে মানববন্ধন করে ‘নির্দলীয়’ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানায় বিএনপি।
প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ‘না’
গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর চা চক্রের আমন্ত্রণে যাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই ব্যাপারে আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পরে হাজার হাজার নেতা-কর্মী যারা আজকে কারাগারে রয়েছেন, আহত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন, প্রার্থীরা অনেকে আহত হয়েছে। সেই অবস্থার প্রেক্ষিতে যে আয়োজন, এই চা-চক্রের যে আয়োজন এটাকে আমরা মনে করি এটা একটা পরিহাস মাত্র।
“সেজন্য এই চা-চক্রে যাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না।”